পোস্টগুলি

সম্পর্ক

সম্পর্ক দূরে যতই থাকি- বুঝতে পারি তুমি এতক্ষণে বাড়ি পৌঁছালে কি না। তুঁতে রং এখনো তোমার বেশ পছন্দের, তাও জানি। বেড়াল ছানাগুলো বিছানায় না থাকলে তোমার ঘুমই আসে না। সকালে উঠেই ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে- মাঠের দিকে তাকিয়ে থাকো নির্ণিমেষ... মেঘ করলে তোমার মন কেমন করে। মেঘলা দিনে তুমি যে কী ভাবতে থাকো! জানি, ছাতিম পাতাটি আজো যত্নে রেখেছ ছাতিম পাতার গন্ধে তোমার বেডরুম... চোখ বুজে বলে দিতে পারি তোমার সব খবর। আর নিশ্চিত জানি- দেখা হবে না আর কোনোদিনও, আমাদের!

ঘরের পথে গাঁ গঞ্জ

ঘরের পথে গাঁ গঞ্জ গল্পটা জানা খুব জরুরী কার্তিকের হিম জ্যোৎস্নায় চোখ রাখো তোমার জন্য দাঁড়িয়ে আছে লতানে পথ মাথা নাড়ছে আউস ধানের শীষ আমানি রঙের মেঘ দিচ্ছে উঁকি ঘরে ফিরবে গাঁ গঞ্জ শস্যদানা খুবলে নেওয়ার দিন শেষ ভাত বেড়ে ডাকছে আমাদের মা চল ভাই আমরা গামছা কাঁধে চানে যাই

শব্দে খনিজ গন্ধ আঁকছে অপূর্ণ চাঁদ

শব্দে খনিজ গন্ধ আঁকছে অপূর্ণ চাঁদ অঘোরে পড়ে থাকা শব্দ মাড়িয়ে অচপল হাওয়ায় খনিজ গন্ধ আঁকছে  বাঁকা চাঁদ  অন্ধকার জমে থাকা বাঁশঝাড়ের মাথায় উঁকি দিচ্ছে জন্মান্তর অতিক্রান্ত দিনের ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলে কিশোরী শব্দ  আড় নয়নে দেখে রাতের ঘরদুয়ার নক্ষত্রদের প্রহর বাঁধা অভিসারে ঘোড়ার মতো ছুটে চলেছে গ্রহান্তরের রাস্তাঘাট জিরিয়ে নেওয়া শব্দ বাঁকা চাঁদটির দিকে ছুঁড়ে দিচ্ছে বেহিসাবি চুম্বন শব্দের বামন হাত গড়িয়ে গড়িয়ে ছুঁতে চাইছে অপূর্ণ চাঁদটির গান রাতের গায়ের লোম খাড়া করা শিহরণ লুফে নিচ্ছে শব্দের সামুদ্রিক অনুরাগ সুদূর কক্ষপথের জানালার ফাঁক দিয়ে শূন্যতার চোখ গিলে খাচ্ছে শব্দের লাবণ্য  বাঁকা চাঁদের পিঠে ঝুলে থাকা রাতের সংসারে অপূর্ণ চাঁদের গান ভিজিয়ে দিচ্ছে শব্দজন্ম গভীর রাতের নিশ্চুপ তুলিতে  শব্দে খনিজ গন্ধ আঁকছে অপূর্ণ চাঁদ

অবিরাম অনন্ত অন্বেষণে

অবিরাম অনন্ত অন্বেষণে বিবমিষা জড়াও আমাকে লেলিহান শুঁয়োপোকা জিভের চেটে খাওয়া থেকে অন্ধকার শোনাও আমাকে বজ্রবিদারী শানিত চোখের অনর্গল লাভাস্রোত গান মহামারী দেখাও আমাকে কোটরাগত জ্যান্ত স্বপ্নের কিলবিল কাদামাখা গড়ন ফুটিফাটা দিন জাগাও আমাকে কতদূর বাঁচার সাধ দীর্ঘতর অনিবার্য অনুরূপ নিশ্চুপ ডোবাও আমাকে থইথই অগাধ যুগান্তরে চিৎ সাঁতার দেহাতি কামনা রঙ রুদ্রবীণা শেখাও আমাকে স্বরলিপি গৎ ভেজা উঠোনে কোলাকুলি টুপটাপ মাতন ঝরাপাতা জানাও আমাকে বৃন্তখসা কৌশল আজ নয় কাল কুয়াশা ঘেরা অনন্তের পথ

কলার ভেলায় গল্প বলছে লখিন্দর

কলার ভেলায় গল্প বলছে লখিন্দর কলার ভেলায় ভাসছে মধ্যযুগের মৃতদেহ  এঁটেল মাটির ঘাটের শরীরে শিহরন পাড়ে দাঁড়িয়ে গেঁয়ো যোগী কিছু কৌতূহল বর্বরতার মুখে চুনকালি মাখিয়ে  চোখের বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে মনসামঙ্গল ভেলার পাশে উড়ছে বেহুলার সাদা থান বুক চাপড়ানো কান্নাকাটি লুফে নিচ্ছে জল দুপুর গড়িয়ে বিকেল এলো মনখারাপের ঢেউ ঘাট লাগোয়া কলার ভেলা ছুঁতে চাইছে মেঘ অস্তাচলে টগবগিয়ে ভেলা যাচ্ছে হেঁইয়ো সাবাস সাদা থান হেঁইয়ো সাবাস নারী হেঁইয়ো সন্ধ্যা হল রাত্রি এলো ভেলার গতি তরতর শীৎকারে ভরে যাচ্ছে বেহায়া জলসাঘর কলার ভেলায় মধ্যযুগ কলার ভেলায় গল্প বলছে লখিন্দর কলার ভেলায় স্বপ্ন বুনছি ফিরে আসবে লখিন্দর

দুঃখ খোঁজে হাওয়ার রাত

দুঃখ খোঁজে হাওয়ার রাত ভেঙে যায় হাওয়ার রাত। দুঃখ কুড়োতে গান গাই, অবসর। জিভের ভিতরে  বয়ে যায়, নদী। অসময়ের চোখের তারা চিকচিক, সময়। আসা যাওয়া কামরাঙা আলো, দেখাদেখি। অনিবার্য শ্বাস গলে যায় জমাট স্বাদ। মেঘের ইশারায় জ্যোৎস্নায় ভেজে মাঠ। দুঃখের বৈতরণী গল্প শোনায়, অনর্গল। আলপথ চুপচাপ ভেঙে যাওয়া, ইতিহাস। পাহাড় গড়ায়  আহ্লাদী হাতে, ফলিত বিস্ময়। ডাকে রাত নিবিড় চলা, অব্যয়। হতশ্রী আমাকে জাগাও ভেঙে দাও, এইবেলা। বলো, জল জল...

ভাত উৎসব

ভাত উৎসব ভাত ফুটছে মাটির হাঁড়িতে ফুটতে ফুটতে জল মরে গেলে আবার জল ঢালা... ভাত ফুটছে তো ফুটছেই- মাগো, আর কতক্ষণ! বাপজান স্নান সেরে দাড়ি আঁচড়াচ্ছে। বুবুজান হলুদ শাড়ি পরে বসে আছে। আমি তাকিয়ে আছি ফুটন্ত হাঁড়িটির দিকে, মা কাঠের টুকরো গুঁজে দিচ্ছে চুলোয়। আজ আমাদের ভাত উৎসব।