পোস্টগুলি

তুমি রবিবার হও

তুমি রবিবার হও                রবিবার, আমার পছন্দতম দিন প্রতিদিন তুমি রবিবার হও। রবিবারের নিরালা সন্ধেবেলা আলো নিভিয়ে লিখতে চাই তুমি মুখর বাদলধারার মতো মৌন ছন্দ ডাকো চারপাশে জানালার ফাঁকে হাত বাড়িয়ে স্পর্শ নেব অকাতরে ঝরে পড়ার ভাসিয়ে দাও কপটতা নাম-যশ অবিশ্বাস

জ্যোৎস্নায় ভিজে যাচ্ছে মধ্যরাত্রি

জ্যোৎস্নায় ভিজে যাচ্ছে মধ্যরাত্রি প্ল্যানিং সিটির এক এঁদো গলির জীর্ণ বাড়ির ছাতে বসে রাতের আকাশ দেখছি নক্ষত্রদের ফুসুরফাসুর আলোর সিঁড়ি বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে সফেদ মেঘের গরাদ দিয়ে চুঁইয়ে পড়া জ্যোৎস্নায় ভিজে যাচ্ছে আমার সর্বাঙ্গ তারাদের মিছিলে ডানা ছড়িয়ে শ্বেত পরিরা এগিয়ে চলেছে অক্ষরেখা বরাবর মধ্যরাতে ছাতে বসে চাঁদের সঙ্গে কয়েকটি তরলমনস্ক নক্ষত্রের খুনসুটি দেখছি জাগতিক চাওয়া পাওয়া ভুলে বোহেমিয়ান সত্তা কোজাগরী সুরসঙ্গতে দিশেহারা নির্ঘুম রাতে তারাদের অভিসারের বেসামাল পদধ্বনি শুনছি আজনবী রাতের মেহফিলে জাঁহাপনা হয়ে  শ্বেত পরিদের পৌরুষ জাগানো নাচ দেখছি জ্যোৎস্নায় ভিজে যাচ্ছে মধ্যরাত্রি....

মুখোশের দিনরাত্রি

মুখোশের দিনরাত্রি ঘুরছে মুখোশ গ্রাম আর শহরে প্রতিক্ষণ গভীর পতনের শব্দ অবিরাম বাজখাই হে চক্রব্যূহ গ্রহণ করো আমার সমর্পণ লবনাক্ত কষ গড়িয়ে তোমাকে ছুঁতে চাই  রক্তচোষা চোখে বন্দি উত্তরাধিকার আমার জাগরণ ছিঁড়ে খায় হানাদার ঘুমন্ত সত্তায় আততায়ীর তাঁতবোনা কচি কচি পাতায় মৃত্যুর প্রহর গোনা দিনে রাতে হাটে বাজারে টহল দেয় ভয় জলকেলি আঁকে অনিবার্য মৃত্যুর জয় বিপন্ন মেঘ আর তারা পাড়ি দেয় দেশান্তর মুখ ঢাকে বাঁচার গান পুড়ে ছাই বনান্তর নিভু নিভু সলতেই দপদপ আলো চমকায়

ভবিতব্য

ভবিতব্য অত্যধিক শখ হইয়াছিল আলাদিনকে আমন্ত্রণ করিব। করিয়াছিলাম। তিনি আসিয়াছিলেন আমাদের রঙচটা মেঝেতে। অট্টহাসি পর্ব সমাধা করিয়া তাহার প্রদীপ ঘর্ষনজাত দৈত্যপ্রবর হূকুম করিতে আদেশ দিয়াছিলেন। জন্ম- মৃত্যু- শোক কী আমি চাহিতেছি- লোভে পড়িয়া শেষোক্ত বস্তুটি চাহিয়াছিলাম। তিনি "শোক" বলিয়াছিলেন ভ্রান্তিবশত আমি শুনিয়াছিলাম " শখ"। পুনর্বার তদ্রুপ অট্টহাসি- জন্ম- মৃত্যুর মাঝে তিনি শোক আনয়ন করিলেন। অতঃপর- তাহার জ্বলন্ত প্রদীপে পুড়িতে লাগিলাম। অদ্যাবধি পুড়িতেছি। শোক - জলধিতে ভাসিতেছে  শখ আহ্লাদ...

অভিনব প্রণয়ের পান্ডুলিপি

অভিনব প্রণয়ের পান্ডুলিপি সীবীচে দাঁড়িয়ে আগন্তুক রৌদ্রকণার চোখ খুবলে নিচ্ছে সমুদ্রের অন্দরমহল জলরাশির সেয়ানা শরীর এঁকেবেঁকে ঢেউয়ের সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে উপহাস অগাধ শূন্যতায় পাড়ি জমানো বালিহাঁসেরা আড়চোখে দেখে নিচ্ছে রৌদ্রকণার অভিসন্ধি অনড়  লকলকে জিভ সেঁধিয়ে যাচ্ছে জলরাশির নাভিকুন্ডের ঘেরাটোপ ধেয়ে আসা ঢেউয়ের দাপাদাপিতে জেগে উঠছে সীবীচের নধর দেহ বেহায়া রৌদ্রকণার ঠাই দাঁড়িয়ে থাকা স্পষ্ট করছে নিষিদ্ধ নগরীর চালচিত্র জলের অবয়ব ছুঁয়ে যাওয়াটুকুই লম্পট রৌদ্রকণার ভবিতব্য আলোড়নহীন জলের গভীরে অগোচরে আঁকা হয় সীবীচের মদির চুম্বন জলরাশির অন্দরমহল অপরূপ সানাইয়ের সুরে আবেশে বুজে চোখ দাঁড়িয়ে থাকা রৌদ্রেকণা সবেগে তাড়িয়ে দেয় প্রহরী জলো হাওয়া রচিত হয় অভিনব প্রণয়ের পান্ডুলিপি

ভুলে থাকা

ভুলে থাকা দীর্ঘ কিছু হেনস্থা রেখে যাই দুঃখ বলে আছে কি কিছু যা আছে সে তো ভুলে থাকা নেশাখোর সময় আমাকে জড়ায় শুধু পাহাড় ডাকে এখানেই আয় আমাকে টানে নদীটির তলপেট  গাছে গাছে থাকে ঝুলে আমার ইচ্ছেবাড়ি গুছিয়ে নিই নিজেকে নিরেট উধাও জানি না কবে কোথায় যাওয়া আসা সলতেতেই সংলাপ জ্বেলে আঁধার তাড়াই  দুঃখ রাখি না কিছু এমনই নেশা অনেক পথ আছে বাকি চলো পা বাড়াই

ফসিল হবার আগে

ফসিল হবার আগে বাজপাখির ধারালো নখে বেচারা মানচিত্র  উড়নচণ্ডী হাওয়ার দু' গালে অশ্রুর ফেনা দিশেহারা আমরা তাকিয়ে আছি বিস্ময় দারুচিনি দ্বীপ সুদূর পরাহত আকাঙ্ক্ষার বীজ নাভিশ্বাসে মুহুর্মুহু আমাদের বুকচাপড়ানো  হাহুতাশ কিংবা তীরন্দাজ ব্যর্থতা ফুটিফাটা ঘর হারানো মেহফিল বারুদ বারুদ দীর্ঘশ্বাস হরদম খুবলে নেয় নখরাঘাত  মহাশূন্যের এক কিনারায় ফাল্গুনী রাত আর একটি বাতাবি গাছের নির্ভয় নাচ নিচুতলার স্বপ্নেরা অনায়াস দর্শক উপর থেকে ঝরে পড়ছে ক্লোরোফিল তবুও নেই উদ্দামতা কুড়িয়ে পাওয়া গড়াগড়ি বাজপাখির নখ এগিয়ে আসছে ক্রমশ কুঁকড়ে যাওয়া চালচিত্র আর কতদিন আমাদের চাই এক নদী ফাল্গুনী রাত আয়ুধ চাই বাতাবি গাছের নির্ভয় নাচ একদিন মহাশূন্য গিলে নেবেই বাজপাখি নখ  উড়িয়ে দিই ঝুড়ি ঝুড়ি যন্ত্রণার আর্তনাদ ফসিল হবার আগেই  আমরা উচ্চারণ করি বাঁচতে চাওয়া ভাষা আর নির্ভয় পাখা ছড়াক সবাক মানচিত্র